বাংলা মৌলিক হরর-সুপার ন্যাচারাল বই আখ্যান
লিখেছেনঃ বাপ্পী খান
বাংলা মৌলিক থ্রিলার-হরর সাহিত্য ইত্যাদি ধারার প্রচলনের ইতিহাসটা ঠিকঠাকভাবে তুলে ধরতে এক কথায় বলতে হয় এটা একদমই অতি সাম্প্রতিক সময়ের এক আখ্যান। মূলত ২০১০ সালের পরেই এই যাত্রাটা বেশ দৃঢ়টার সাথেই এগিয়েছে। বেশ কয়েকজন তরুণ লেখক, তাদের ভিন্ন ভাবনা, অদ্ভুত সব চিন্তার ফসল হিসেবে পাঠক পেয়েছে মনে রাখার মতো কিছু বই।
হ্যাঁ, এর আগেও বিচ্ছিন্নভাবে দু’একটা কাজ হয়েছে এই ধারায়। পাঠকেরা সেগুলোও পছন্দ করেছেন। আমরা সেখান থেকেও কিছু আলোচনা করব। তবে আমরা মূলত বলব ধারাবাহিক এক চর্চার কথা। বাংলা মৌলিক হরর-সুপার ন্যাচারল ধারার উল্লেখযোগ্য বইগুলোর কথা।
আমাদের এই ফিচারে উঠে এসেছে এমনই কিছু বই এর আলাপ।
আধিভৌতিক এবং সেইসাথে অদ্ভুত কিছু রহস্য, যেগুলো আমাদের প্রচলিত ঘরানার ভূত পেত্নীর চেয়ে একদমই আলাদা। সেইসাথে কিছু মিথ আর তার অনুসন্ধান। এ সব মিলেই জামশেদ মুস্তফির হাড়। যদি আমার ভুল না হয়, তবে বাংলাদেশে ‘এন্থলজি’ ধারায় প্রথম আধিভৌতিক কাহিনী আবদুল হাই মিনার এর লেখা এই জামশেদ মুস্তফির হাড়। বইয়ের প্রধান চরিত্র কুটি কবিরাজ, যে কি না বিভিন্নভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে কিছু অদ্ভুত ঘটনার সাথে। সেগুলোর সাক্ষী কর্নেল (অবঃ) গোলাম আহমদ মুনতাসির হায়দার একটু একটু করে বয়ান করেন সেই আখ্যান। সেটাই গল্পের মূল বিবরণ। ভিন্ন ধারার লেখনশৈলী আর কাহিনীর উপস্থাপনার জোরে আজ সত্যিকার অর্থেই এক কাল্ট ক্লাসিকে পরিণত হয়েছে ১৯৮০ সালে সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই অসাধারণ বইটি। দূর্ভাগ্যজনক হলেও, বর্তমানে মূল বইটি আর প্রকাশিত হয় না। তবে পাঠকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রতিচ্ছবি প্রকাশন কুটি কবিরাজের সব অদ্ভুত গল্পগুলোর একটা সংকলন প্রকাশ করেছে। কুটি কবিরাজ সমগ্র নামের সেই বইটিও বর্তমানে পাঠকদের কাছে সমাদৃত।
পাঠকদের সুবিধার্থে জামশেদ মুস্তফির হাড় বইয়ের বিস্তারিত দেয়া হলো। সেই সাথে কুটি কবিরাজ সমগ্র বইটারও বিস্তারিত দিচ্ছিঃ
বই: জামশেদ মুস্তফির হাড়
লেখক: আবদুল হাই মিনার
প্রকাশনী: সেবা প্রকাশনী
পৃষ্ঠা: ১৫১
প্রকাশকালঃ ১৯৮০
লেখক: আবদুল হাই মিনার
প্রকাশনী: প্রতিচ্ছবি প্রকাশন
মুদ্রিত মূল্য ৪৫০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০২১
প্রেতঃ
বাংলাদেশে স্যাটানিজম, ব্ল্যাক ম্যাজিক রিচুয়াল, সাইকিক ইত্যাদি নিয়ে লেখা প্রথম পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস বললে প্রথমেই মনে আসে মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা প্রেত বইটির কথা। অন্য একটি প্রকাশনী থেকে পেপারব্যাক এ প্রকাশিত হলেও ১৯৯৪ সালে জ্ঞানকোষ প্রকাশনী থেকে হার্ডকভারে পূনঃমুদ্রিত এই বইটি আজও পাঠক সমাদৃত। রুমি নামের একদমই সাদামাটা চরিত্রের এক যুবকের জীবনের সাথে জড়িয়ে পড়া এক ভয়ানক শয়তান পূজারি চক্র ও তাদের লোভ-লালসার পরিণামের চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল বইটাতে। উল্লেখ্য, পরবর্তীতে বইটা অবলম্বনে ধারাবাহিক টিভি নাটকও প্রচারিত হলে সেটাও পাঠকদের মনে দাগ কেটেছিল।
পাঠকদের সুবিধার্থে প্রেত বইয়ের বিস্তারিত (বর্তমান সংস্করণ) দেয়া হলোঃ
বই: প্রেত
লেখক: মুহম্মদ জাফর ইকবাল
প্রকাশনী: জ্ঞানকোষ প্রকাশনী
পৃষ্ঠা: ১১২
মুদ্রিত মূল্য ১৭৫ টাকা
প্রকাশকালঃ ১৯৯৪
মুহম্মদ আলমগীর তৈমুর
বাংলা ভাষার মৌলিকে অকাল্ট ধারার হরর ফিকশনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছিলেন যিনি, তার নাম মুহম্মদ আলমগীর তৈমুর। রহস্য পত্রিকায় তার প্রকাশিত বংশালের বনলতা, হাকিনী ইত্যাদি গল্পগুলো দারুন জনপ্রিয়তা পায়। ভিন্ন স্বাদের হররের জাত চিনিয়ে পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেন। পরবর্তীতে তার প্রকাশিত সব গুল্পগুলো নিয়ে প্রকাশিত গল্প সংকলন ‘বংশালের বনলতা’ প্রকাশিত হয় যেটা তুমুল আলোচিত হয়েছিল। বাংলা হররের ক্ষেত্রে আজও মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয় এই বইটা। সময় প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইটির মুদ্রিত মূল্য ২২৫ টাকা।
বর্তমানে এই বইয়ের গল্পগুলোর সাথে মুহম্মদ আলমগীর তৈমুরের পরবর্তীতে প্রকাশিত নোভেলা এবং গল্পগুলো এক করে বিব্লিওফাইল প্রকাশ করেছ নিগৃঢ় সিরিজ। এছাড়াও দ্য হিউম্যান কাইমেরা : বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন, বেতাল এই দুটো বইও প্রকাশ করেছে তারা, যেখানে লেখকের সম্পূর্ণ নতুন লেখা রয়েছে।
পাঠকদের সুবিধার্থে বইয়ের বিস্তারিত দেয়া হলোঃ
নিগৃঢ়—১
লেখকঃ মুহম্মদ আলমগীর তৈমুর
গল্প/নভেলা সংকলন
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩২০ টাকা।
প্রকাশনীঃ বিব্লিওফাইল
***
দ্য হিউম্যান কাইমেরা : বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন
লেখকঃ মুহম্মদ আলমগীর তৈমুর
উপন্যাস
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩২০ টাকা।
প্রকাশনীঃ বিব্লিওফাইল
***
বেতাল
লেখকঃ মুহম্মদ আলমগীর তৈমুর
উপন্যাস
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৬০ টাকা।
প্রকাশনীঃ বিব্লিওফাইল
এছাড়া তাঁর অন্যান্য বইগুলো হচ্ছে, বংশালের বনলতা, প্রাচীন মুদ্রা, হাকিনী, কান্তজিউয়ের পিশাচ ইত্যাদি।
হুমায়ূন আহমেদ
কুটু মিয়াঃ
নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্যের না না ধারায় বিচরণ করে গেছেন। রোমান্টিক থেকে সমকালীন, সামাজিকতা থেকে অতিপ্রাকৃত, রম্য কিংবা ভৌতিক- সব ঘরানাতেই তার লেখা রয়েছে। তবে তার লেখা সত্যকার উইয়ার্ড ফিকশন বলতে যে কয়েকটা বই রয়েছে তার মধ্যে নিঃসন্দেহে কুটু মিয়া অন্যতম। রহস্যময় চরিত্র কুটু মিয়া এবং তার গা শিউড়ে ওঠা কাজ কারবার পাঠকদের ভাবনায় ফেলে দেয় বারংবার। সে কে? কেন তার আবির্ভাব, এসবের আড়ালে মূল প্রশ্ন সে আসলে কি! সত্যকার এক কাল্ট ক্লাসিকে ক্রমশ রূপ নিচ্ছে বইটি।
বইটির বিস্তারিতঃ
বইঃ কুটু মিয়া
লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ
প্রকাশনাঃ অন্যপ্রকাশ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১১২ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ২৮০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০০৪
বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকেঃ
তার নাম কুটু মিয়া। বয়স চল্লিশ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে। সে বাবুর্চি কাজ জানে। বাংলা , ইংলিশ, থাই, মোগলাই সব ধরনের রান্না পারে। পাইলট স্যার তাকে একটা সার্টিফিকেট দিয়েছেন। এই সার্টিফিকেট নিয়ে সে কাজ করতে এসেছে আলাউদ্দিন সাহেবের বাড়িতে।
আলাউদ্দিন সাহেবের কুটু মিয়াকে পছন্দ হলো না। তাঁর নাম হলো কোথাও কোনো সমস্যা আছে। সমস্যা তিনি ধরতে পারছেন না। ইচ্ছার বিরুদ্ধে তিনি ধরতে পারছেন না। তাঁর জীবনের বদলে যেতে শুরু করে। এক সময় দেখা গেল তিনি কুটু মিয়কে সঙ্গে নিয়ে গুনগুন করে গান গাইছেন-
যমুনার জল দেখতে কালো
স্নান করিতে লাগে ভালো
যৌবন ভাসিয়া গেছে জলে।।
‘কুটু মিয়া’ ভয়ঙ্কর অন্ধকার এক ভু্বনের গল্প। চেতনার অতল গহ্বরে জন্মানো আতঙ্কের গল্প। যে আতঙ্ক আমরা গোপনে লালন করি কিন্তু এখনো তার মুখোমুখি হই না।
তানজীম রহমান
২০১৫ সালে বাতিঘর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তানজীম রহমানের প্রথম মৌলিক উপন্যাস ছিল আর্কন। প্রথম বইতেই বাজিমাত করেছিলেন লেখক। ভিন্নধর্মী কাহিনী-উপস্থাপনার সাথে ছিল অদ্ভুত কিছু চরিত্র। ছিল এক প্রাচীন ধর্মের আখ্যান, যা প্রায় বিলুপ্ত। আর ছিল অপার্থিব রহস্যময় এক প্রাণী। সে কে? কী চায়?
তরুণ প্রজন্মের লেখকদের মধ্যে হরর সাহিত্যে নিজের উপস্থিতির জানান বেশ ভালোমতোই দিয়েছিলেন তানজীম রহমান।
আর্কন
লেখকঃ তানজীম রহমান
প্রকাশনাঃ বাতিঘর প্রকাশনী
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩৩৬ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ৩০০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০১৫
বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকেঃ
একদল খুনি। ওদের কেউ প্রথমবারের মতো খুন করতে যাচ্ছে, কেউ আগে দুর্ঘটনাবশত খুন করেছে, কারো আবার খুন করাটাই নেশা। ওদের সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে মাটির গভীরে রহস্যময় এক গোলকধাঁধায়। ওরা জানতে পারলো এখানে ওদের জন্য অপেক্ষা করচে ভয়ংকর অপার্থিব রহস্যময় এক প্রাণী। পালাতে চাইলে ফাঁকি দেওয়া যাবে না তাকে। পথের কাঁটা সরাতে হলে আবার খুন করতে হবে, প্রাণীটাকে, এবং হয়ত মানুষকেও। শুরু হলো বেঁচে থাকার এক রোমহর্ষক অভিযান। বেরিয়ে আসতে শুরু করলো একের পর এক রহস্যের জাল। গোলকধাঁধার অজানা বিপদ, শিকারী প্রাণীটির নারকীয় হত্যা আর একে অপরের ষঢ়যন্ত্রে টানাটান হয়ে ওঠে কাহিনী।
অক্টারিনঃ
২০১৬ সালে প্রকাশিত এই বইটা বাংলা হরর প্রেমীদের কাছে আজও চিহ্নিত হয়ে আছে একটা ‘ট্রেণ্ড সেটার’ হিসেবে। একই উপন্যাসে কয়েকটি ধর্ম এবং অঞ্চলের মিথ, সুনিপূন বর্ণনা, কাহিনীর প্লট সব মিলিয়ে এক অসাধারণ ভয়ের আখ্যান। যদিও লেখক এটিকে একটি ‘পজেশন-মিষ্ট্রি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তবে পাঠকদের কাছে এই বইটা ধরা দেয় আরও অনেক বিস্তৃত এক কলেবরে। শুধু নিছক জ্বিন বা অপশক্তি ভর করা নিয়েই এই কাহিনী সীমাবদ্ধ ছিল না। কাহিনীর ডালপালা ছড়িয়েছে আরও একাধিক মিথের মিশেলে। বিশেষত একই বইয়ে ধার্মিক যুবক, ধর্ম শিক্ষক মুমিন এবং কনটেম্পোরারি অকাল্ট-সুপার পাওয়ার এক্সপার্ট/ ম্যাজিশিয়ান হিসেবে অ্যানিমার মতো চরিত্রের সৃষ্টি এবং তাদের নিয়ে ঘটনা সাজানর দক্ষতা পাঠকদের মুগ্ধ করেছিল। সম্প্রতি বইটির সিক্যুয়েল এর ঘোষনা দিয়েছেন লেখক। আশা করি সেটাও অক্টারিন এর মতো এক জমজমাট কাহিনীতে রচিত হবে।
বইটির বিস্তারিতঃ
বইঃ অক্টারিন
লেখকঃ তানজীম রহমান
প্রকাশনাঃ বাতিঘর প্রকাশনী
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩৮৪ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ৩৮০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০১৬
বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকেঃ
মার্ডার মিস্ট্রি হয়তো পড়েছেন আগে, কিন্তু পজেশন মিস্ট্রি ?
কোন অশুভ শক্তির ছায়া পড়েছে দেশের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবারের একমাত্র মেয়ের ওপর– সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নিয়োগ করা হলো অদ্ভুত এক মানুষকে; অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার সাথে যার আছে নিবিড়, তিক্ত অভিজ্ঞতা । কিন্তু তদন্তে ডুব দেবার পরই বুঝতে পারলো চোরাবালি আসলে কতোটা গভীর । একা একা সমস্যার জট খোলা সম্ভব নয়, অন্য এক ধরনের বিশেষজ্ঞের সাহায্যের দরকার। দরকার একজন রিচুয়াল ম্যাজিশিয়ানের ।
ওরা দু-জন মিলেও কি এই মারাত্মক রহস্যের জাল ভেদ করতে পারবে ? প্রতি পদে অপেক্ষা করছে বিপদ–ছায়ার আড়ালে গা ঢাকা দিয়ে আছে অকল্পনীয় ক্ষমতাধর এক আততায়ী ।
আর্কন-খ্যাত তানজীম রহমানের হরর থৃলার অক্টারিন-এর পাতায় লুকিয়ে আছে খুন, জাদু, কিংবদন্তি আর চক্রান্তের আশ্চর্য এক উপন্যাস যা চুম্বকের মতো আপনার মনোযোগকে আকর্ষণ করবে ।
সৈয়দ অনির্বাণ
ব্যাতিক্রমধর্মী প্লট, ম্যাজিক ডুয়েল, গ্রাম বাংলার স্থানীয় বিভিন্ন মিথলজিকাল চরিত্র ও প্রেক্ষাপটের মিশেলে সৈয়দ অনির্বাণ এর লেখা সিরিজের প্রথম বইটা প্রকাশিত হলে সেটা পাঠকদের নজড় কারে। পরের বইতে ইতিহাসের বিভিন্ন চরিত্র যেমন অ্যালেক্সান্ডার, আটিলা, চেঙ্গিস আর বাবরের রাজত্বের সূত্রে গল্প টেনে নিয়ে ট্রিলজির শেষ বইতে সব সুতো জোড়া দিয়েছিলেন লেখক। অবলাল, বাঘাতুর,ক্যাপ্টেন অ্যান্ড্রিয়াসের মতো অদ্ভুত রহস্যময় সব চরিত্রের পাশাপাশি শক্তিশালী কিছু অ্যাকশন দৃশ্য এবং সাবলিল বর্ণনা এই সিরিজের অন্যতম প্রধান আকর্ষন। বাংলায় হরর ফ্যান্টাসি উপন্যাস লেখাটা সহজ কাজ নয় মোটেও। অথচ সেই কাজটিই লেখক করিয়ে দেখিয়েছেন দক্ষতার সাথে। বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে পাঠক চাহিদার কারণে সম্প্রতি কলকাতার ‘বুকিকার্ট’ ও ট্রিলজিটি কলকাতায় প্রকাশের ঘোষনা দিয়েছে।
শোণিত উপাখ্যান: বর্তমান- শোণিত উপাখ্যান: অতীত- শোণিত উপাখ্যান: অতঃপর, আদী প্রকাশন থেকে ২০১৫-২০১৭-২০১৯ সালে প্রকাশিত এই বই তিনটিকে বলা যায় বাংলা হরর-ফ্যান্টাসিতে আরবান ফিকশন ধারার প্রথম স্বার্থক ট্রিলজি।
এক নজরে পুরো ট্রিলজির বিস্তারিতঃ
বইঃ শোণিত উপাখ্যান: বর্তমান
লেখকঃ সৈয়দ অনির্বাণ
প্রকাশনাঃ আদী প্রকাশন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৭৫ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ২৫০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০১৫
কাহিনী সংক্ষেপঃ
ইতিহাস কথা বলে – বিজয়ীদের কথা । ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় – অতীত গৌরবের সাক্ষ্য। কিন্তু কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া ঘটনাবলির কতটুকু তাতে অটুট থাকে ?
অসামাজিক কিন্তু তুখোড় পুলিশ অফিসার কায়েস হায়দারের কাঁধে চাপল অদ্ভুত এক কেস সমাধানের ভার । পরিস্থিতি এমনই দাঁড়াল যেখানে যুক্তি কাজ করে না । রহস্য মানব অবলালের কাছে সাহায্য চাইল কায়েস। দু’জনে মিলে নেমে পড়ল তদন্তে। কিন্তু কেঁচো খুড়তে গিয়ে এ যে সাপের বাসা!
একের পর এক অতিপ্রাকৃতিক প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হলো কায়েস আর অবলাল। আধুনিক ঢাকা শহরে এ কী নাটক জমে উঠেছে ! শুধু পিশাচ, স্কন্ধকাটা, চুড়েল আর শক্তিশেলধারী যাদুকরই নয়, এর পেছনে রয়েছে আরও গুঢ় কোন রহস্য ।
জড়িয়ে পড়ল আরও অনেকে–সুদর্শনা মীরানা মোরেস, যে কি না প্রতি রাতে একই স্বপ্ন দেখে। শখের অকালটিস্ট নাজিম আর ক্যাপ্টেন অ্যান্ড্রিয়াস–-কারা এরা ?
ধীরে ধীরে উন্মোচিত হলো ভয়াবহ এক চক্রান্তের জাল । সামনে রয়েছে শৈলেন ভট্টাচার্যের ভয়ঙ্কর দলবল, কিন্তু নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে অসীম শক্তিধর কেউ, কী তার পরিচয় ? দেড় হাজার বছর আগে ঘটে যাওয়া এক প্রলয়ঙ্কর ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় সে । নিষ্ফল বসে প্রহর গোণা ছাড়া কি কিছুই করার নেই ? নাকি কেউ বাড়িয়ে দেবে অযাচিত সাহায্যের হাত ?
সব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে রক্তের মাঝে । শোণিতের উপাখ্যানে ।
বইঃ শোণিত উপাখ্যান: অতীত
লেখকঃ সৈয়দ অনির্বাণ
প্রকাশনাঃ আদী প্রকাশন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২২৮ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ৩০০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০১৭
ইতিহাস কথা বলে – বিজয়ীদের কথা । ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় – অতীত গৌরবের সাক্ষ্য। কিন্তু কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া ঘটনাবলির কতটুকু তাতে অটুট থাকে ?
কাহিনি সংক্ষেপঃ
শোণিত উপাখ্যান ত্রয়ী-এর দ্বিতীয় বই।
বর্তমান-এ বর্ণিত কাহিনির ব্যাখ্যা পেতে যেতে হবে অতীত-এ। জানতে হবে মহাকালের স্রতে হারিয়ে যাওয়া সেইসব ঘটনাবলী যার ফলশ্রুতিতে ঢাকার বুকে আজ জমে উঠেছে এক অতিপ্রাকৃত নাটক।
এক অতিপ্রাকৃত নাটক ।
ডুব দিতে হবে সুদূর ‘অতীত’-এ। আলেক্সান্ডার, আটিলা, চেঙ্গিস আর বাবরের দরবারে। শুনতে হবে বীরযোদ্ধা বাঘাতুর আর পুরোহিত অবলোহিতের গল্প। কিসের ধারাবাহিকতায় শৈলেন ভট্টাচার্য আর যংকসুর আজ সমবেত? ফিরতে হবে ‘নিকটে’- জানতে হবে তরঙ্গের বেড়ে উঠার প্রেক্ষাপট। রূমী নামের একটা ছেলের কারণে কী ঘটেছিল ‘পিশাচের গ্রাম’-এ?
কী কারণে তিক্ত হয়েছে সাদা হাত আর অর্ধ জীবন্মৃত ক্যাপ্টেন অ্যান্ডিয়াসের সম্পর্ক? কেনই বা মীরানা মোরেসকে বারো বছর আগে ফিরিয়ে দিয়েছিল অবলাল? কী অসমাপ্ত কাহিনি লুকিয়ে আছে ওদের অতীতে?
সব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে রক্তের উপাখ্যানে- শোণিত উপাখ্যা।
বইঃ শোণিত উপাখ্যান: অতঃপর
লেখকঃ সৈয়দ অনির্বাণ
প্রকাশনাঃ আদী প্রকাশন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২২২ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ৩৭০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০১৯
কাহিনী সংক্ষেপঃ
ইতিহাস কথা বলে–বিজয়ীদের কথা। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়–অতীত গৌরবের সাক্ষ্য। কিন্তু কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া ঘটনাবলির কতটুকু তাতে অটুট থাকে?
শোণিত উপাখ্যান–বর্তমান-এ যে কাহিনীর পর্দা উন্মোচিত হয়েছিল, তার পূর্বের সূত্র এবং পটভূমি বর্ণিত হয়েছে শোণিত উপাখ্যান–অতীত-এ। এবারের পর্ব অতঃপর।
মোঘল সম্রাট বাবরের দরবারে পৌঁছানোর পর কী ঘটেছিল শোণিত মন্দিরের প্রধান পুরোহিত লোহিতের ভাগ্যে? সেই ঘটনার পরিক্রমায় অবলোহিত আর বাঘাতুরই বা কী ভূমিকা রেখেছিল?
এদিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মীরানা মোরেসকে অপহরণ করেছে কে? কায়েস-অবলাল যে কেসের তদন্ত করছে তার সঙ্গে এর কীসের সম্পর্ক?
হঠাৎ ঘনিয়ে ওঠা এই অরাজকতা সামাল দিতে কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সাদা হাত? কেনই বা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে রয়্যাল ভ্যাম্পায়ার রাতিবর?
ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে অর্ধ-জীবন্মৃত ক্যাপ্টেন অ্যান্ড্রিয়াস, বেসেলি ক্ষমতার ধারক তরঙ্গ ওরফে অবলাল, দুই পুলিশ ইন্সপেক্টর কায়েস আর রবিউল।
আসলে কে রয়েছে নেপথ্যে? কী তার মহা-পরিকল্পনা? সর্বোপরি, কীভাবে এই নাটকের যবনিকাপাত ঘটবে?
সব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে রক্তের উপাখ্যানে–‘শোণিত উপাখ্যান’।
জাহিদ হোসেন
একজোড়া চোখ খোঁজে আরেকজোড়া চোখকে
জাহিদ হোসেনের লেখা এই বইটির নাম যতোই কাব্যিক শোনাক না কেন, এটি আদতে একটা পুরোদস্তুর লাভক্রাফটিয়ান হরর। পাঠকদের মতে বাংলাদেশের প্রথম পূর্নাঙ্গ লাভক্রাফটিয়ান হরর এটা। প্রকাশের সাথেসাথেই তুমুল আলোচিত হয়েছিল বইটি।
… এগিয়ে আসছে লড়াই। ত্রীৎরা অপেক্ষা করছে শুধু একজনের জন্য। তার আগমন অবসম্ভাবি। হে মানবজাতি সাবধান হও! ত্রীৎ আসছে তাদের সর্বশক্তি নিয়ে।- এইচ.পি লাভক্রাফট এর বেশ কয়েকটা মিথ, বীভৎস রসের বিবরন, উদ্ভট কল্পনা শক্তি আর বিচিত্র সব চরিত্রের মিশেলে লেখা বইটি নিজগুণেই জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বাংলাদেশে বাতিঘর প্রকাশনী এবং পরবর্তীতে পাঠকপ্রিয়তার কারনে কলকাতার অভিজান পাবলিশার্সও বইটার কলকাতা ভার্শন প্রকাশ করে।
বইটির বিস্তারিতঃ
বইঃ একজোড়া চোখ খোঁজে আরেকজোড়া চোখকে
লেখকঃ জাহিদ হোসেন
প্রকাশনাঃ বাতিঘর প্রকাশনী
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৯৬ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ১৪০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০১৮
কাহিনী সংক্ষেপঃ
এক রাতে ব্রিগুদার জুডিথ ডারহাম অদ্ভুত এক স্বপ্ন দেখে। প্রথম প্রথম কেউ পাত্তা দেয়নি। স্বপ্ন তো অনেকেই দেখে, অত পাত্তা দেয়ার কী আছে! কিন্তু ব্রিগুদার সবাই ঐ একই স্বপ্ন দেখা শুরু করলে সবার টনক নড়ে। তারপর এক ভয়াল রাতে ব্রিগুদা গ্রামটি তছনছ হয়ে যায়। পড়ে থাকে স্রেফ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন কিছু দেহ। গ্রামের একমাত্র গির্জায় কে জানি এক জোড়া চোখের ছবি এঁকে রেখেছে। নিচে লেখা–পীংক্রী রীট্রিক্রা ক্রেয়ীৎ স্পাক্রা লিক্রিৎ…
মফস্বলের বস্তিতে গা ঢাকা দেয়া লেখক মোহাম্মদ আসগর আলী চায়ের দোকানে অদ্ভুত এক গল্প শোনেন। সেই গল্পের সুলুক-সন্ধানে মোটর-পার্টস দোকানি সাচ্চুকে নিয়ে পরাবাস্তব এক অভিযানে নেমে পড়েন তিনি। তার অভিযাত্রায় আরো সঙ্গি হন ইউনিভার্সিটি’র লেকচারার রেহমান সিদ্দিক ও তার রগচটা বোন ফারহানা। তারা কী পারবে অদ্ভুত এ গল্পের সফল যবনিকা টানতে? পরাবাস্তবতা কী বাস্তবে এসে মিশবে? নাকি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে সব?
এ কাহিনী জনপ্রিয় লেখক মোহাম্মদ আসগর আলীর, এ কাহিনী বনশ্রী’র মক্ষীরাণী অ্যালিসের, এ কাহিনী সাইবেরিয়ার ললনা নাতাশা’র, এ কাহিনী খোঁড়া ক্রিমিনোলজিস্ট রেহমান সিদ্দিকের–সর্বোপরি এ কাহিনী ত্রীতের!
ত্রীৎ! যারা ছিল, যারা আছে, যারা থাকবে..
কাদ্যুসেয়াস
এই বইটার আগে জাহিদ হোসেন লিখেছিলেন ঈশ্বরের মুখোশ ও ফিনিক্স এর মতো রিভেঞ্জ ঘরানার দুটো সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। গোর, সাসপেন্স, হিউমার এবং ব্যাতিক্রমধর্মী প্লটে টুইষ্ট- ইত্যাদির মিশেলে সে বইদুটি পাঠকপৃয়তা অর্জন করেছিল। কাদ্যুসেয়াস এর প্রথম অর্ধেক পড়েও পাঠকদের মনে সেই বইদুটোর মতোই অনুভূতি জাগে। বীভৎস উপায়ে খুন হচ্ছে, সাথে চলছে ক্ষমতা প্রদর্শনের যুদ্ধ। রয়েছে এক শক্তিশালী অথচ অজ্ঞাত আততায়ীর দৌরাত্ম্য। পাঠকেরা ভেবেই নিয়েছিলেন এটা রিভেঞ্জ ট্রিলজির শেষ বই হতে যাচ্ছে। কিন্তু বই এর দ্বিতীয়ভাগে যেয়েই সবার ভুল ভাঙে। ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয় এক ভিন্ন গুপ্তচক্রের খেল।
গল্পের প্রয়োজনে আস্ত একটা কাল্পনিক ধর্মই সৃষ্টি করেছেন লেখক জাহিদ হোসেন। ধর্মীয় সেই সংঘটন, এ্যানশিয়েন্ট অর্ডার অভ দ্য সেক্রেড মাউন্টেনের প্রধান ধর্মগুরু হাইঞ্জ বেকার ছাড়াও আবজাব ডিপার্টমেন্টেরই ঘাড়ত্যাঁড়া গোয়েন্দা রহমান জুলফিকার, তার সঙ্গী তারছেঁড়া কনসালটেন্ট শাহজাহান ভূঁইয়ার মতো অদ্ভুত কিছু চরিত্র, সাথে উদ্ভট কিছু রিচুয়াল আর তাদের চারপাশেই সুপ্রাচীন এক বইয়ের খোঁজে হন্য হয়ে ঘুরছে এক গোলাপি টাইধারী। সব মিলিয়ে এক জম্পেশ আরবান ফিকশন। একই গল্পে একাধিক জনরার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে জাহিদ হোসেন বেশ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছিলেন।
বইটির বিস্তারিতঃ
বইঃ কাদ্যুসেয়াস
লেখকঃ জাহিদ হোসেন
প্রকাশনাঃ বাতিঘর প্রকাশনী
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৯০ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ২৭০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০১৭
কাহিনী সংক্ষেপঃ
এই কাহিনীর শুরু কয়েক হাজার বছর আগে…
প্রখ্যাত শিল্পপতি আজমত উল্ল্যাহ’র একমাত্র ছেলে ওয়াসিফ উল্ল্যাহকে নৃশংসভাবে খুন করা হলো। লাশ ঘিরে বিচিত্র সব আঁকিবুকি, একপাশে রাখা সুদৃশ্য চেয়ার। চেয়ারের সামনে গামলা ভর্তি রক্ত, মানবরক্ত!
কেসটার দায়িত্ব পড়ে সিআইডি’র সদ্য গঠিত এক ডিপার্টমেন্টের ঘাড়ে-ডিপার্টমেন্ট অভ এক্সট্রাঅর্ডিনারী কেসেজ। আড়ালে আবডালে সবাই যাকে আবজাব ডিপার্টমেন্ট বলে নাক সিঁটকায়। এই আবজাব ডিপার্টমেন্টেরই ঘাড়ত্যাঁড়া গোয়েন্দা রহমান জুলফিকার, খুনীর খোঁজে গলিঘুঁপচি খোঁজে বেড়ায় সে। আর তার সঙ্গী তারছেঁড়া কনসালটেন্ট শাহজাহান ভূঁইয়া।
এ আখ্যানের আরেক চরিত্র বিলুপ্তপ্রায় ধর্মীয় সংঘটন এ্যানশিয়েন্ট অর্ডার অভ দ্য সেক্রেড মাউন্টেনের প্রধান ধর্মগুরু হাইঞ্জ বেকার। কালো আলখাল্লাধারীরা হামলা চালায় তার ওপর, রক্তবন্যা বয় আশুগঞ্জের এক হোটেলে। হোটেলের দেয়ালে আঁকা দুর্বোধ্য সিম্বল ও তারচেয়েও দুর্বোধ্য কিছু কথা।
সুপ্রাচীন এক বইয়ের খোঁজে হন্য হয়ে ঘুরছে এক গোলাপি টাইধারী। পরনে স্যুটকোট, কাঁধে ঝুলানো গলফ ব্যাগ। যেখানেই যাচ্ছে সে, বইয়ে দিচ্ছে রক্তের নহর। এদিকে একের পর এক খুন করে যাচ্ছে ম্যাড ডগ নামের এক ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার।
হাজার বছর আগে যে কাহিনীর শুরু তার সফল সমাপ্তি কী ঘটবে? নাকি আঁধারে ছেয়ে যাবে ধরণী?
কাদ্যুসেয়াস এক বিচিত্র ধর্মবিশ্বাসের গল্প, কাদ্যুসেয়াস আলো ও আঁধারের গল্প, কাদ্যুসেয়াস উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও ক্ষমতার গল্প, কাদ্যুসেয়াস ভালোবাসা ও ঘৃণার গল্প।
কথুলহু
২০১৯ সালে ভূমিপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয় তরুণ লেখক আসিফ রুডলফায এর লেখা কথুলহু। বাংলাদেশি লাভক্রাফটিয়ান হরর ঘরানায় আরেকটি পালক যোগ করে বইটি। এইচ পি লাভক্রাফট এর কালজয়ী মিথ কথুলহু অবলম্বনে বইয়ের নামকরণ হলেও বইটিতে রয়েছে লাভক্রাফট এর একাধিক মিথ এর ট্রিবিউট। গল্পে নানা প্রয়োজনে “কথুলহু মিথোস” এর নানা চরিত্র সরাসরি বা রেফারেন্সের মাধ্যমেই এসেছে। প্লট, বিল্ড আপ, সাসপেন্স, চরিত্রায়ন আর সাবলিল লেখনশৈলী– সবমিলিয়ে এক পূর্ণাঙ্গ লাভক্রাফটিয়ান ট্রিবিউট আসিফ রুডলফায এর লেখা এই কথুলহু।
বইটির বিস্তারিতঃ
বইঃ কথুলহু
লেখকঃ আসিফ রুডলফায
প্রকাশনাঃ ভূমিপ্রকাশ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৯২ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ২৬০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০১৯
কাহিনী সংক্ষেপঃ
অদ্ভুত এক দুঃস্বপ্ন দেখার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে একেরপর এক মানুষ। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে একসময় আত্মহত্যা করে বসছে কেউ কেউ। অথবা ভীষণ আতংকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পরিণত হচ্ছে বিবেকহীন খুনে উন্মাদে। সাইকিয়াট্রিস্ট ডক্টর জিয়াউল হক হাজার ভেবেও এই রহস্যের কোনো কুল-কিনারা পাচ্ছেন না।
এদিকে দেশের মাটিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মহাক্ষমতাধর এক অশুভচক্র। দুঃস্বপ্নের শিকার মানুষগুলোকে নিয়ে কিছু একটা গোপন অভিসন্ধি আছে তাদের। লোকচক্ষুর আড়ালে কিসের এক্সপেরিমেন্ট চলছে আর্কহাম স্যানেটরিয়ামে? আর ইউরোপের নামজাদা নিউক্লিয়ার ফিজিক্স ল্যাবরেটরির সাথেই বা এর সম্পর্ক কি?
চেনাজানা দুনিয়ার ওপাশ থেকে এগিয়ে আসছে এক মহাজাগতিক অপশক্তি। তার আগমন ধ্বনিতে কাঁপছে পৃথিবী। মহাপ্রলয়ের বুঝি আর বেশি বাকি নেই।
আঁধারের গহীন নিরুদ্দেশে
বাংলাভাষায় গথিক হরর জনরার মতো অপ্রচলিত এক ধারায় নিজের প্রথম বই লিখেছিলেন ওয়াসি আহমেদ। শুধু গথিক নয়, প্রাচীন বাংলার কিছু ইতিহাসকেও সেই সুতোয় গেঁথেছেন বেশ দক্ষতার সাথে। এই উপমহাদেশে চায়ের আগমন এবং নীল চাষের ইতিহাসকেও গল্পের সাথে সুন্দরমতো মিশিয়ে দিয়েছেন। পুরনো প্রেক্ষাপটে কাহিনী কল্পনা, তার ভাষাগত দিকটা ফুটিয়ে তোলার পাশাপাশি তখনকার রাঁধুনি , বাউল ,তান্ত্রিক ,নাবিক সহ নানা ধরণের অদ্ভুতুড়ে চরিত্রও তুলে এনেছেন। সেইসাথে দেখিয়েছেন ইতিহাসের ফাঁকে লুকিয়ে থাকা অন্য এক জগত। এসব দিক বিবেচনায় বলা যায়, গথিক হরর হিসেবে বেশ সফল এক উপন্যাস আঁধারের গহীন নিরুদ্দেশে।
বইটির বিস্তারিতঃ
বইঃ আঁধারের গহীন নিরুদ্দেশে
লেখকঃ ওয়াসি আহমেদ
প্রকাশনাঃ বাতিঘর প্রকাশনী
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৪৪ পৃষ্ঠা
মূদ্রিত মূল্যঃ ১৫০ টাকা
প্রকাশকালঃ ২০১৮
কাহিনী সংক্ষেপঃ
১৯১৮ সাল। বাবার মৃত্যুর দুঃখকে সঙ্গি করে মাধবগঞ্জে পা রাখে নসিব। উদ্দেশ্য; সাহেব আলী নামের এক রহস্যময় বাউলের জীবন আর কর্ম সম্পর্কে জানা। কিন্তু সেই সুস্পষ্ট উদ্দেশ্যের আড়ালেও, অন্য কোন লক্ষ্য লুকিয়ে নেই তো?
একজন অঘোরনাথ তান্ত্রিক, মোস্তফা মাস্টার অথবা চায়ের দোকানদার সুবোধ ঘোষের গল্পে মৃত্যুর স্থান কোথায়? বিকলাঙ্গ এক বালকের তাতে কতোটুকুই বা ভূমিকা থাকতে পারে?
নীল বিদ্রোহ থেকে ভাগ্যের ফেরে বেঁচে যাওয়া জাদুকর অ্যান্ডারসনের কল্যাণে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথমবারের মতো অনুপ্রবেশ ঘটে সার্কাস নামক প্রথার। রহস্যময় এক কটেজের গোঁড়াপত্তনও তার হাত ধরে ঘটেছিল; সাতান্ন বছর আগে একদল ঠগির মৃত্যুর পর যেখানে ভয়ে কেউ পা বাড়ায়নি। ধরে নেয়া যাক, এই গল্পটা তারই।
গল্পটা হয়তো ষোড়শ শতকের পর্তুগিজ নাবিক অ্যামরিক গিরাল্ডোর। একই সাথে অনিন্দ্য সুন্দরি অনিতার গল্পও বলা যেতে পারে।