কারাগার ৪৬০০
তানজিরুল ইসলাম
পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত কারাগারের জেলার মিহনান রাশাদ যখন খবরটা শুনলো, ঠিক বিশ্বাস করতে পারলো না। একটা মুহূর্ত থম মেরে রইলো সে। চোখের পাতা বন্ধ করে ভাবতে লাগলো ব্যাপারটা আসলেই সত্যি কিনা। কিন্তু এইমাত্র সে যার কাছ থেকে খবরটা পেলো, সে তাকে ভুল তথ্য দেবার কথা নয়। কাশিতো দিতাক, ডেপুটি জেলারÑসেই তাকে খবরটা দিলো।
রাশাদ চোখ বন্ধ অবস্থাতেই দিতাককে জিজ্ঞেস করলো, “মি. দিতাক, আপনি যা বলছেন, তা কি পুরোপুরি সঠিক?”
“জি স্যার।” ডেপুটি জেলার কাশিতো দিতাক উত্তর ফেরালো। “এর মধ্যে কোনো ভুল নেই। আমি একটু আগে কারাগারে এসে ব্যাপারটা দেখতে পাই। সাথে সাথেই আপনাকে কল করেছি।”
খবরের সত্যতা যাচাই করে রাশাদের মুখটা কুঁচকে গেলো। তারপরও সে শান্ত কণ্ঠে উত্তর দিলো, “ঠিক আছে। আমি আসছি।”
কলটা কেটে সে তার এক অধস্তনকে ডেকে পাঠালো। বললো ফ্লাইং কারটা বের করতে। আদেশ পেয়ে সেই অধস্তন অফিসার স্যালুট ঠুকে চলে গেলো।
লোকটা ঘর থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে রাশাদ টুকটাক কিছু কাজকর্ম সেরে নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে লাগলো। পরনে সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট আগে থেকেই ছিলো। হ্যাঙার থেকে কালো কোটটা নামিয়ে নিয়ে গায়ে চাপালো সে। পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে মুখে পুড়লো। লম্বা একটা টান দিয়ে ধোঁয়াটা ছেড়ে দিলো বাতাসের মধ্যে। পাশের টেবিলটায় সুদৃশ্য চকচকে পুলিশ ব্যাজ আর আধুনিক মডেলের একটা স্মার্টপিস্তল রাখা আছে। একে একে ওগুলো তুলে নিয়ে বুকের ওপর ব্যাজটা লাগালো সে, আর স্মার্টপিস্তলটা গুঁজলো বগলের সোল্ডার হোলস্টারে। তারপর সিগারেটে আরেকটা টান দিয়ে পা বাড়ালো।
সে যখন গ্যারেজে পৌঁছালো, ফ্লাইং কারটা ততক্ষণে রওনা দেবার জন্য প্রস্তুত। টেসলা ব্রান্ডের ‘ফিনিক্স এক্স থার্টিন’ মডেল। ওটার পাশে সাদা পোশাকে চারজন অফিসার দাঁড়িয়ে। তবে ওদের মধ্যে সবাই মানুষ নয়। একজন আছে, যে মানুষ থেকে ভিন্ন। সাম্প্রতিক মডেলের একটা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পন্ন হিউম্যানয়েড রোবট। রোবটটার শারিরীক শক্তি, কমব্যাট স্কিল, প্রিসেশন, অ্যাকুরেসি, কর্মক্ষমতা সবই মানুষের থেকে উর্ধ্বে।
রাশাদকে দেখা মাত্রই এক অফিসার ফ্লাইং কারের পেছনের দরজা খুলে ধরলো। মিহনান রাশাদ হাঁটার গতি না কমিয়ে সরাসরি উঠে গেলো খোলা দরজা গলে। সে ওঠার পর একে একে উঠে বসলো অন্যরাও। রাশাদের পেছনের সিটে বসলো দুজন, দুজন বসলো সামনের সিটে। রোবট অফিসার বসলো চালকের আসনে। চাবি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে গাড়িটা স্টার্ট দিলো। অল্পক্ষণের মধ্যেই গাড়িটা উড়াল দিলো আকাশে। কারাগার ৪৬০০ এর দিকে যেতে শুরু করলো।
যাবার সময় সবুজে ছাওয়া ছোট-বড় পাহাড় দেখা গেল নিচে। কোথাও পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে আঁকাবাঁকা ঝিড়ি বা নদী ছুটে যাচ্ছে অজানায়। কোথাও বা পাহাড় বেয়ে প্রবল উচ্ছাসে গড়িয়ে পড়ছে ঝরণার উত্তাল জলরাশি। দূরে ওগুলোকে ছুঁয়ে দিগন্তে মিশেছে নীল আকাশ। আকাশের গায়ে সাদা সাদা তুলোর মতো মেঘ। রৌদবর্ষণে সবকিছু চকচক করছে। উৎফুল্ল মনে অবলোকন করলে নির্ঘাত ঘোর লেগে যেত। কিন্তু রাশাদের বর্তমান মানসিক অবস্থায় দৃশ্যগুলো ওকে খুব একটা স্পর্শ করতে পারলো না। ওর মনের আদ্যপান্ত ঘুরছে শুধু ডেপুটি জেলার কাশিতো দিতাকের কাছ থেকে শোনা কথাগুলো। অন্যসবকিছুই এখন ওর ভাবনার বাইরে।
কিছুক্ষণ ভ্রমণ করার পর দৃষ্টিসীমার ধার ঘেষে একটা বিন্দু রূপে কারাগার ৪৬০০ এর উদয় হলো। সময়ের সাথে সাথে দূরত্ব যতই কমতে লাগলো, ততই আরো স্পষ্ট ও আরো বড় হয়ে উঠতে লাগলো বিন্দুটা। আস্তে আস্তে পরিষ্কার কাঠামো ধারণ করলো।
পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারাগারগুলোর একটি এই ‘কারাগার ৪৬০০’। এক পাহাড়ি অঞ্চলের উপযুক্ত একটা পাহাড় কেটে তার অভ্যন্তরে পুরো কারাগারটা বানানো হয়েছে। সমস্ত কারাগার জুড়ে ইস্পাত কঠিন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সার্বক্ষণিক দেখাশোনা ও কয়েদিদের সামলানোর জন্য আছে কতগুলো হিউম্যানয়েড রোবট। সেগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় স্বয়ংসম্পূর্ণ একটা কোয়ান্টাম কম্পিউটার থেকে। শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটারটিকে আইজ্যাক বলে ডাকা হয়। আইজ্যাকের নিজস্ব আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স আছে। গোটা কারাগারের সবকিছু ঠিকঠাক ও নিয়মের মধ্যে সামলে রাখে সেটাই।
আর মানুষ বলতে আছে ডেপুটি জেলার ও কিছু বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কনস্টেবল। মূল কারাগারের বাইরে একটা কোয়ার্টারে তাদের থাকার ব্যবস্থা।
সুরক্ষিত এই কারাগারটায় পৃথিবীর সবচেয়ে সাংঘাতিক অপরাধীগুলোকে আটকে রাখা হয়। শক্তিশালী মাফিয়া, দুর্ধর্ষ ড্রাগডিলার, অসংখ্য খুন করা বিপজ্জনক সিরিয়াল কিলার, কুখ্যাত স্মাগলার ও হিটম্যানসহ আরো অনেকে। এদের মধ্যে কেউ কেউ একেবারে কিংবদন্তিসম। দুনিয়াজোড়া তাদের কুকর্মের ইতিহাস বিখ্যাত।
এছাড়াও এ কারাগারের আরো একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। সেটা হচ্ছে সাইকোলজিক্যাল ম্যানিপুলেশন। আইজ্যাকের দুর্দান্ত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অপরাধীগুলোকে সাইকোলজিক্যালি ম্যানিপুলেট করে তাদের মানসিকতা বদলাবার চেষ্টা করে যেন তারা তাদের অপরাধমূলক চিন্তাভাবনা ও অপরাধকর্ম দমন করে স্বাভাবিক মানুষ হয়ে উঠতে পারে। ইতোমধ্যে অনেক অপরাধীই এই সাইকোলজিক্যাল ম্যানিপুলেশনের বদৌলতে সুস্থ চিন্তার মানুষ হিসেবে পুনর্বাসিত হয়েছে। কিন্তু পদ্ধতিটা যে সবার ওপর কাজ করে এমন নয়। কিছু কিছু এমন অপরাধী আছে, যাদের ওপর দীর্ঘ সময় ধরে সাইকোলজিক্যাল ম্যানিপুলেশন চালানো হলেও কার্যকর কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি…
“স্যার।” এক অফিসারের ডাকে মিহনান রাশাদ সম্বিৎ ফিরে পেলো। তাকিয়ে দেখলো সেই অফিসার তার নামার জন্য ফ্লাইং কারের দরজা খুলে ধরে আছে। আকাশযানটা যে কখন কারাগারের সামনে ল্যান্ড করেছে, খেয়ালই করেনি রাশাদ।
সে চুপচাপ ফ্লাইং কারটা থেকে বের হয়ে এলো। কারাগারের দরজার দিকে খানিক হাঁটতেই খেয়াল করলো ভেতর থেকে কাশিতো দিতাক আর দুজন কনস্টেবল বের হয়ে আসছে। কাছে এসে রাশাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো দিতাক। কনস্টেবল দুজন স্যালুট ঠুকলো।
“মি. দিতাক।” মিহনান রাশাদ কোনো সময় নষ্ট করলো না। সরাসরি কাজের কথায় চলে গেলো। “আমাকে বিস্তারিত বলুন।”
“চলুন, স্যার। ভেতরে যেতে যেতে বলছি।” উত্তর ফেরালো দিতাক।
“ঠিক আছে, চলুন।”
এরপর ওরা ভেতরের দিকে পা বাড়ালো। ডেপুটি জেলার দিতাক বলতে শুরু করলো। “কলে যা বলেছিলাম, কারাগারের সব কয়েদি পালিয়ে গেছে। আমি আজ সকাল নয়টায় রুটিন চেকআপের জন্য কারাগারে আসি। তখন দেখতে পাই সবগুলো হিউম্যানয়েড রোবট বিকল হয়ে পড়ে আছে। শুধু তাই নয়, প্রত্যেকটা সেলের প্রত্যেকটা দরজা খোলা, ভেতরে কোনো কয়েদি নেই। আমার সাথে দুজন কনস্টেবল ছিলো। আমি ওদের জিজ্ঞেস করলাম, এখানে কী হয়েছে। ওরা মাথা নেড়ে জানালো ওদের কোনো ধারণাই নেই। আমার সাথেই নাকি ওরা আজকে প্রথমবার কারাগারে ঢুকেছে। তার আগ পর্যন্ত ওরা বাইরেই ছিলো।”
মিহনান রাশাদ প্রশ্ন করলো, “আপনাদের কেউ কিছু টের পেলেন না? ভেতরে কোনো সমস্যা হলে তো আইজ্যাক থেকে সাথে সাথে সংকেত পাঠানোর কথা।”
“সিস্টেম অনুযায়ী সেটাই হবার কথা ছিলো, স্যার। কিন্তু কোয়ান্টাম কম্পিউটারটা কোনো সংকেত পাঠায়নি।”
“কেন?” একটু অবাক হলো রাশাদ। “ওটা কি নষ্ট হয়ে গেছে?”
“সেরকম তো মনে হচ্ছে না।” একটু যেন দ্বিধা দিতাকের গলায়। “আধা ঘন্টা ধরে আমাদের টেকনিশিয়ান ওটার পুরো সিস্টেম চেক করে দেখছে। এখন পর্যন্ত সে কোনো সমস্যা বের করতে পারেনি।”
“তাহলে চলুন, একবার টেকনিশিয়ানের সাথে কথা বলি।”
“ঠিক আছে, স্যার। চলুন।”
সবাই কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মেইনটেন্যান্স রুমের উদ্দেশ্যে এগোতে শুরু করলো। সেখানে পৌঁছে দেখা গেলো তরুণ টেকনিশিয়ান কোয়ান্টাম কম্পিউটারের কমিউনিকেশন প্যানেলের সাথে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সংযোগ দিয়ে গভীর মনোযোগে কাজ করছে।
দিতাক ছেলেটার নাম ধরে ডাকলো। “সাজিন, কিছু পেলে?”
সাজিন চোখ তুলে তাকালো। প্রশ্নটার প্রভাবস্বরূপ একটা বিহŸল দৃষ্টি ফুটে উঠলো তার চোখে। “এখনও সেরকম কিছু পাইনি, স্যার। সিস্টেমের আদ্যোপান্ত তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি। প্রোগ্রামে বাগ আছে কিনা, সিস্টেমের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ডিলেট হয়ে গেছে কিনা, বা কোনো ভাইরাসের কারণে এমন হলো কিনাÑসবকিছুই ঘেটে দেখেছি। কিন্তু সমস্যা তৈরির মতো কোনোকিছু কোথাও পাইনি।”
“তাহলে এমন কেন হলো?” এবার প্রশ্নটা করলো রাশাদ।
“আমি জানি না, স্যার।” অনিশ্চিত উত্তর বেরোলো সাজিনের মুখ থেকে।
এর মধ্যেই এক কনস্টেবল হাঁপাতে হাঁপাতে দৌড়ে এলো। এসে স্যালুট ঠুকলো কোনোমতে। রাশাদ আসার কিছুক্ষণ আগে কোথাও কিছু পাওয়া যায় কিনা, সেটা দেখার জন্য কয়েকজন কনস্টেবলকে পাঠিয়েছিলো দিতাক। ওদের মধ্যে একজন কেবল ফিরে এলো। দিতাক ফিরতি কনস্টেবলকে প্রশ্ন করলো, “কী হয়েছে?”
লোকটা হাঁপাতে হাঁপাতেই জবাব দিলো, “মারাত্মক একটা জিনিস পেয়েছি, স্যার। দয়া করে একটু আমার সাথে আসুন।”
সম্মতির আশায় দিতাক তার উর্ধ্বতন, জেলার রাশাদের দিকে তাকালো।
“ঠিক আছে, চলুন।” সম্মতি দিলো রাশাদ।
সবাই তখন কনস্টেবলটাকে অনুসরণ করতে শুরু করলো। কিন্তু পেছনে বিভিন্ন রকম যন্ত্রের মাঝে ডুবে রইলো সাজিন। সে তার জায়গা ছাড়লো না।
কনস্টেবলের পেছন পেছন কারাগারের একদম শেষ পর্যন্ত যেতে হলো। ভেতরে যতটা বড়ো, বাইরে থেকে কারাগারটাকে ততটা বিশাল মনে হয় না। কিন্তু একবার ভেতরে ঢুকে পুরোটা দেখতে চাইলে সে ধারণা নিমেষেই বদলে যাবে। কারাগারটার বিশালতা উপলব্ধি করে থ মেরে যেতে হবে নির্ঘাত।
ওদের এই সংক্ষিপ্ত সফরে অনেকগুলো সেল নজরে পড়লো। সবগুলোই খালি। অথচ আগে এগুলোর প্রায় প্রত্যেকটাতেই একজন করে অপরাধী ছিলো। সেগুলোকে এখন খালি পড়ে থাকতে দেখে কেমন যেন অস্বস্তি খেলতে লাগলো রাশাদের মনে। অস্বস্তির আরেকটা কারণ মাঝখানের করিডোরটাও। দুপাশ জুড়ে অবস্থিত সেলগুলোর মাঝের লম্বা করিডোরটা আগে এমন নির্জীব ছিলো না। একটু পর পর একটা-দুটো হিউম্যানয়েড রোবট দাঁড়িয়ে থাকতো। তবে এখন যে রোবটগুলো নেই, এমন নয়। সেগুলো আছে। কিন্তু বিকল হয়ে মাটিতে পড়ে আছে মৃতের মতো।
কিছুক্ষণ পর কনস্টেবল লোকটা শেষ দিকের একটা খালি সেলের সামনে থামলো। “স্যার, ভেতরে দেখুন।”
সেলের দরজা খোলাই ছিলো। খোলা দরজা দিয়ে আগে ভেতরে ঢুকলো মিহনান রাশাদ। তার ঠিক পেছনেই কাশিতো দিতাক প্রবেশ করলো। বাকিরাও ঢুকে পড়লো একে একে। সেলের ঠিক মাঝখানে এসে সবাই দাঁড়ালো।
ঘরটার তেমন বিশেষত্ব নেই। একপাশের দেয়াল ঘেঁষে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেবার জন্য ঘোলা একটা কাচের আড়াল করে বসানো হয়েছে কমড। অন্যপাশে একটা টেবিল আর চেয়ার। টেবিলের ওপর কিছু কাগজ ও বই। শোবার জন্য খাটটা রাখা আছে টেবিল আর কমডের মাঝখানে, একদম দেয়াল ঘেঁষে। আর খাটের ওপরে দেয়ালের গায়েই সেই জিনিসটা!
কালো কালিতে লেখা একটা বার্তা।
মিহনান রাশাদ সেটা পড়তে শুরু করলো। সে যতই বার্তাটার গভীরে প্রবেশ করলো, ততই তার ভেতরটা নড়ে উঠলো। এমন একজন অপরাধী বার্তাটা রেখে গেছে, যার ওপর সাইকোলজিক্যাল ম্যানিপুলেশন কাজ করেনি। এমন একজন অপরাধী বার্তাটা রেখে গেছে যে মানসিকভাবে অত্যন্ত দৃঢ় ও সীমাহীন শক্তিশালী। তার নিজেরই অপরকে সাইকোলজিক্যালি ম্যানিপুলেট করার অসাধারণ ক্ষমতা আছে। তাকে ম্যানিপুলেট করতে ব্যর্থ হয়েছে আইজ্যাক, উল্টো আইজ্যাককেই ম্যানিপুলেট করেছে সে। এভাবে কারাগারের সব অপরাধীকে মুক্ত করেছে। আর আইজ্যাকের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে ঢুকিয়ে দিয়েছে মারাত্মক অপরাধ প্রবণতা।
বার্তার বক্তব্য জেনে মিহনান রাশাদের চিপ বেয়ে খানিক ঘাম নেমে এলো। একটু অসুস্থ অসুস্থ লাগছে তার। সে নির্দেশ দিলো, “চলুন এখান থেকে।”
কথাটা বলার পর ঘুরে দাঁড়ালো। কিন্তু সে অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো সেলের দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। কোয়ান্টাম কম্পিউটার আইজ্যাকের গলা শোনা গেলো। “আপনারা কোথাও যেতে পারবেন না।”
আশেপাশে যে নিষ্ক্রিয় রোবটগুলো পড়ে ছিলো, সেগুলো আবার জীবন্ত হয়ে উঠলো আস্তে আস্তে। দলবেধে ধাবমান সৈন্যদলের মতো সারি করে রাশাদদের দিকে এগোতে লাগলো।
ওগুলোর চোখে কেমন যেন একটা খুনে দৃষ্টি।
কাছে আসতে আসতে হিউম্যানয়েড রোবটগুলো অস্ত্র তুলে ধরলো।
লিখেছেন তানজিরুল ইসলাম