প্রিন্সের ডায়ানার মৃত্যু: কেন প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুকে অনেকেই স্বাভাবিক মনে করেন না?

তারিখ:

পোস্ট শেয়ার করুন:

প্রিন্সের ডায়ানার মৃত্যু: কেন প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুকে অনেকেই স্বাভাবিক মনে করেন না?

১৯৯৭ সালের আগস্টের ৩১ তারিখে প্রিন্স চার্লসের প্রথম স্ত্রী, প্রিন্সেস ডায়ানা প্যারিসে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। হুট করে এভাবে প্রিন্সেস ডায়ানার নিহত হওয়ার ঘটনা অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি তখন।

আর এই নিয়ে কম জল্পনা কল্পনা হয়নি, কম পানিও ঘোলা হয়নি। আইন, মিডিয়া থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণেরাও প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন দিনের পর দিন। এই মৃত্যু স্বাভাবিক এক দুর্ঘটনা ছিলো, নাকি এটা ছিলো ইচ্ছাকৃত কোন ষড়যন্ত্র -তা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে অনেকেই নিজের মতামত বিভিন্ন ভাবে তুলে ধরেছিলেন ওই সময়ে।

প্রিয় পাঠক, চলে আসলাম আজকে আবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে । আমাদের আজকের বিষয় হচ্ছে প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুকে কেন কেউ কেউ স্বাভাবিক মনে করেন না সেটা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা! আশা করি শুরু থেকে শেষ অবধি আমাদের সাথেই থাকবেন-

প্রিন্সেস ডায়ানা
পত্রিকার শিরোনামে প্রিন্সেস ডায়ানা’র মৃত্যুসংবাদ। ছবি- সংগৃহীত

চলুন তাহলে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক-

প্রিন্সেস ডায়ানার নিহত হওয়ার আগের বছর অর্থাৎ ১৯৯৬ সালেই প্রিন্স অফ ওয়েলস তথা প্রিন্স চার্লস এর সঙ্গে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে।

প্রিন্সেস ডায়ানা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচণ্ড খ্যাতিমান, এবং দয়ালু একজন মহিলা হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি লাভ করেছিলেন। মিষ্টিমুখের এবং প্রচণ্ড ব্যক্তিত্বের অধিকারী প্রিন্সেস ডায়না বিখ্যাত ছিলেন তাঁর সৌন্দর্যের জন্য এবং বিভিন্ন জনহিতকর কাজের জন্য। তিনি কাজ করেছেন এইডস এর বিরুদ্ধে সচেতনতা নিয়ে, কাজ করেছেন ভুমি মাইনের বিরুদ্ধে। ফ্যাশন, সৌন্দর্য্য ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রিন্সেস ডায়ানার আধিপত্য ছিলো নজরকারা ।

এতো দাতব্য কাজ এবং দানশীলতার জন্য প্রিন্সেস ডায়ানা যেমন বিখ্যাত ছিলেন, তেমনি মৃত্যুর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই জড়িয়ে গিয়েছিলেন বেশ কিছু কেলেঙ্কারির গুজবে। প্রিন্স চার্লসের পরকীয়া, বিশ্বাসঘাতকতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ডায়ানা এতোটাই ভেঙে পরেছিলেন, নিজেও জড়িয়ে পরেন বিভিন্ন রিউমার-এ! অবশেষে চার্লস এবং ডায়ানার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় ১৯৯৬ সালে।

এরপরে ডায়ানা সম্পর্কে জড়ান দোদি ফায়েদের সাথে। দোদি ফায়েদের সাথে থাকাকালীন ফ্রান্সের প্যারিসে ডায়ানা নিহত হন এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাতে।

ডায়ানা এভাবে মারা যাওয়ায় শুরু হয় ডায়ানার মৃত্যুর ঘটনাকে নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দুনিয়াজুড়ে বিখ্যাত প্রিন্সেস ডায়ানা এতোটাই ভক্তদের মনে গেথেছিলেন, তাঁর এভাবে মৃত্যকে তাই অনেকেই স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারেনি। তাছাড়া সুক্ষ্ম ভাবে বিশ্লেষণ করলে এমন কিছু সূত্র পাওয়া যায় যাতে এটা মনে হওয়া স্বাভাবিক, ডায়ানার এভাবে মৃত্যু কোন স্বাভাবিক ব্যাপার ছিলো না।

যদিও ডায়ানার মৃত্যুর তদন্ত রিপোর্ট এ এটাই এসেছে প্রিন্সেস ডায়ানার গাড়িচালক মাতাল ছিলেন, তাই এভাবে গাড়ীর এক্সিডেন্ট হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু প্রিন্সেস ডায়ানার ভক্তরা এখনো এটাই বিশ্বাস করেন নিশ্চয়ই এভাবে গাড়ি এক্সিডেন্ট এর পেছনে আরো গোপনীয় এবং ইচ্ছাকৃত কোন ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।

প্রথমত, মারা যাওয়ার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই প্রিন্সেস ডায়ানা সন্দেহ করতে শুরু করেন যে তাকে মেরে ফেলা হবে। পল ব্যারেল নামের এক সময়ের ডায়ানার ব্যাক্তিগত এক খানসামা প্রিন্সেস ডায়ানার লিখা একটি চিঠি জনসম্মুখে প্রকাশ করেন যেখানে ডায়ানা লিখেছেন-

“আমি আজ এই অক্টোবরে আমার ডেস্কে বসে আছি ৷ আমি আশা করছি আমাকে কেউ জড়িয়ে ধরবে এবং আমাকে উৎসাহ দিবে আরো শক্ত হতে এবং আমার মাথা উঁচু করতে । আমি আমার জীবনের সবচেয়ে বিপদজনক পর্যায়ে আছি, যেখানে চার্লসের বিয়ে করার পথ পরিস্কার করার জন্য আমার গাড়িতে একটি দুর্ঘটনা ঘটানোর, ব্রেইক ফেইল করানোর এবং আমার মাথায় অত্যন্ত গুরুতর আঘাত প্রদান করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।”

প্রিন্সেস ডায়ানার নিহত হওয়ার ঘটনায় ফটোগ্রাফার বা পাপারাজ্জিদেরকেও দায়ী করা হয় ৷ এবং এ বিষয়ে সরাসরি অভিযোগ ও দায়ের করা হয়েছিল। অভিযোগ করা হয়েছিল ফটোগ্রাফারদের দল ডায়েনাকে বহন করা মার্সিডিজ গাড়িকে ফলো করেছিলো এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে এই গাড়িটাকে ধাক্কাও দিয়েছিল ৷ আবার কেউ কেউ এটা ও ব্লেইম করেছিলো যে ফটোগ্রাফাররা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন এক পরিবেশ ওই সময়ে তৈরী করেছিলো-যাতে ডায়ানাকে বহনকারী গাড়িটি দুর্ঘটনায় কবলিত হতে পারে।

অনেকে আবার ডায়ানার গাড়ির চালক হেনরী পলকে এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেন। তাদের মতে হেনরী পল ইচ্ছা করেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন। যেহেতু এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ওই সময় হেনরী পল মাতাল ছিলেন, তাই এটা মনে হতে পারে তিনি মাতলামির কারনে বেহুশ হয়ে গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন। কিন্তু হেনরী পলের প্রফেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড যদি দেখেন, উনি ওই সময় প্যারিসের রিটজ হোটেলের একজন নিরাপত্তা প্রধান ছিলেন ৷ এরকম দ্বায়িত্বশীল একজন মানুষের শুধুমাত্র মদ খেয়ে মাতাল হয়ে পুরোপুরিভাবে নিজের উপর এবং গাড়ির স্টিয়ারিং এর উপর নিয়ন্ত্রণ হারানো ভিত্তিহীন মনে করেন অনেকেই । তাছাড়া হেনরী পলের মাতাল হয়ে গাড়ি চালানোর ঘটনা মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়াটাও একটা বড় ধরনের মিথ্যা আর ষড়যন্ত্র বলে দাবী করেন অনেকেই।

আবার প্রিন্সেস ডায়ানার সমর্থকের এক দল এটাও দাবী করেন যে ডায়ানাকে বহন করা গাড়িতে কিছু সমস্যা ইচ্ছাকৃতভাবেই করা ছিলো। প্রথমত গাড়িটা অস্বাভাবিক গতিতে চলছিলো- দ্বিতীয়ত গাড়ির রুটে ও কিছু ব্লকেজ এর কাহিনি করে রাখা হয়েছিল।

ফাইনালি যখন প্রিন্সেস ডায়ানাকে দুর্ঘটনার পরে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, অনেকেই মনে করেন সেখানেও চিকিৎসকদের গাফিলতি বা ইচ্ছাকৃত অনীহা ছিলো ৷ আর তাই চিকিৎসকরা ডায়ানাকে সঠিক চিকিৎসা দেয়নি, এবং এ জন্য ডায়ানা সুস্থ হতেও পারেনি।

ব্রিটিশ পরিবারের এই রাজবধু ছিলেন কোটি কোটি মানুষের স্বপ্নের রাণী। তাঁর সৌন্দর্য আর ব্যাক্তিত্বের এক অপার কম্বিনেশন তাকে শুধু জগৎবিখ্যাত করেছেন তা নয়, পাশাপাশি মানব সেবায় অনবদ্য ভূমিকার কারনেও ডায়ানা ছিলেন সবার আলোচনার বিষয়বস্তু।

যদিও প্রিন্স চার্লস এবং প্রিন্সেস ডায়ানার বিয়েটা ছিলো প্রেমের বিয়ে, কিন্তু এই বিয়ের সুখ শেষ পর্যন্ত আর বজায় থাকেনি। নব্বই দশকের শুরুর দিক থেকেই শুরু হয় চার্লস আর ডায়ানার সংসার জীবনের টানাপোড়েন কাহিনি ৷ প্রথম প্রথম তাদের দাম্পত্য কলহ শুধু চার দেয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও আস্তে আস্তে মিডিয়ার বরাতে তা ছড়িয়ে পরে সবখানে।

মিডিয়াতে চার্লস এবং ডায়ানা তাদের দাম্পত্যকলহের জন্য একে অপরকে দায়ী করতে থাকে ৷ অবশেষে দাম্পত্যকলহের জের ধরেই চার্লসের জীবনে আসে তাঁর সাবেক প্রেমিকা ক্যামেলিয়া পার্কার । আর এদিকে ডায়ানাও বসে থাকেননি, তিনিও যোগাযোগ শুরু করেন তার সাবেক প্রেমিক জেমস গিলবের সাথে ৷ ক্রমান্বয়ে চার্লস এবং ডায়ানার দাম্পত্যকলহ এতোটাই বাড়তে থাকে যে ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরের ৯ তারিখ থেকে তারা সেপারেশন এ চলে যান। এবং ১৯৯৬ সালের আগস্টের ২৮ তারিখে অফিসিয়ালি তারা ডিভোর্স নেন।

প্রিন্সেস ডায়ানার নিহত হওয়ার সময় সাথে ছিলেন তাঁর মিশরীয় প্রেমিক দোদি আল ফায়েদ। মিশরীয় এই ধনকুবের এর সাথে ডায়ানা সম্পর্কে জড়ান প্রিন্স চার্লসের সাথে ডিভোর্স হওয়ার পর পরেই। মিডিয়ার কল্যাণে এই খবর যখন সবার সামনে আসে, দুনিয়াজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। আর সম্ভবত এই কারণেই ডায়ানা তখন মিডিয়ার লোকজনকে এড়িয়ে যেতেন।

দুর্ঘটনা যেদিন ঘটে, ওইদিন রাতে প্যারিসের এক হোটেল থেকে দোদির সাথে বের হয়েছিলেন ডায়ানা । সাংবাদিকরা এর পরেই মোটরসাইকেল নিয়ে ডায়ানা এবং দোদিকে বহন করা গাড়িটিকে ফলো করতে থাকেন৷

সাংবাদিকদের এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই ডায়ানার গাড়িটি জোরে চালাতে বলেন । এভাবে জোরে চালানোর কারনেই গাড়িটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়, গাড়ির চালক আর দোদি ঘটনাস্থলেই মারা যান। ডায়ানাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কয়েক ঘন্টা মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে ডায়ানা মারা যান।

মহীয়সী এই নারীর মৃতদেহ ইংল্যান্ড-এ নিয়ে আসা হয়, এবং রাজকীয় মর্যাদায় তার অন্তোষ্টিক্রিয়া করা হয় ৷ এলথার্প এর একটি দ্বীপে অবশেষে শায়িত করা হয় দুনিয়াজোড়া বিখ্যাত এই নারীকে।

প্রিন্সেস ডায়ানা
ছবিঃ প্রিন্স চার্লস, ছেলে উইলিয়াম ও হ্যারি। প্রিন্সেস ডায়ানা’র শেষকৃত্য। সংগৃহীত

ডায়ানার মারা যাওয়ার ঘটনায় সারা বিশ্বের মানুষ হতবাক হয়েছে, হয়েছে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। অজস্র মানুষ চোখের পানি ফেলেছে ডায়ানা মারা যাওয়ার খবর শুনে। ডায়ানার শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান যখন সরাসরি টিভিতে দেখানো হয়, প্রায় বত্রিশ মিলিয়ন মানুষ এই অনুষ্ঠানটি টিভিতে দেখে ৷ সাধারণ মানুষের নিকট ডায়ানা এতোটাই পছন্দের আর ভালোবাসার ছিলেন যে, ডায়ানাকে শ্রদ্ধা জানাতে আসার সময় সাধারণ জনগণের নিয়ে আসা ফুলে ইংল্যান্ডের অনেক রাস্তাঘাটে ফুলের বড় বড় স্তুপ জমে গিয়েছিলো!

মজার ব্যাপার হচ্ছে, শুধুমাত্র সৌন্দর্যের কারনে ডায়ানা ছিলেন ওই সময়ে সবচাইতে বেশি বার ক্যামেরা বন্দী হওয়া একজন সেলিব্রেটি । মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত সুন্দরী এই রাজবধু ছিলেন দুনিয়াতে সবচেয়ে জনপ্রিয় নারী, সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্যাশন আইকন এবং প্রচন্ড জনহিতকর একজন মানুষ। এমনকি তার মারা যাওয়ার ২১ বছর পরেও তার জনপ্রিয়তায় ভাটা করেনি কোন অংশেই । এখনো কোটি কোটি মানুষের শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার পাত্রী হয়েই চিরনিদ্রায় স্পেন্সারদের ব্যাক্তিগত এক দ্বীপে ঘুমিয়ে আছেন সবার প্রিয় প্রিন্সেস ডায়ানা-দ্যা এক্স হার রয়্যাল হাইনেস, দ্যা প্রিন্সেস অব ওয়েলস!

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া

গল্পসল্প ইতিহাস

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

spot_img

সম্পর্কিত নিবন্ধ

জুতা (ছোট গল্প)- আফিন্দী

জুতাবিদ্যুৎ’এর গলার তেজে ফাঁকা মেসরুম গমগম করে উঠলো, “ভাই, তুমি যাবে পাঁচ ভাইয়ে? খিদেয় আমার জান যায়! খালা...

মৃত্যু পরবর্তী জগতের অভিজ্ঞতা 

মৃত্যু পরবর্তী জগতের অভিজ্ঞতা  মৃত্যু পরবর্তী জীবনের অভিজ্ঞতা কেমন? মানুষ তার অনিশ্চিত জীবনে শুধু একটি বিষয়ের নিশ্চয়তা নিয়ে জন্মেছে।...

বুক রিভিউ- হুমায়ূন আহমেদের ‘মেঘ বলেছে যাব যাব’

বুক রিভিউ- হুমায়ূন আহমেদের 'মেঘ বলেছে যাব যাব' বুক রিভিউ- হুমায়ূন আহমেদের 'মেঘ বলেছে যাব যাব'।বইয়ের নাম:মেঘ বলেছে যাব...

ডা. স্যাটান: সিরিয়াল কিলার ডা. মার্সেল পেটিওটের ভয়ংকর গল্প!

তাকে আখ্যা দেয়া হয়েছিল ডা. স্যাটান বলে। তিনি একই সাথে একজন সৈনিক, ডাক্তার, মেয়র, ভয়ঙ্কর অপরাধী এবং সিরিয়াল...